"https://www.facebook.com/sonatandhormo>

Tuesday, January 20, 2015

এদেশে যখনই ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবী উঠে তখনই একদল স্যুটেড-বুটেড, ক্লিন সেভেড বুদ্ধিজীবী এর
বিরোধীতা করে যুক্তি দেখান- ইউরোপ
আমেরিকাতেও খ্রিস্টান মৌলবাদী দল আছে,
তাদের যদি রাজনীতি করার অধিকার
থাকে তাহলে এই দেশে ধর্মভিত্তিক
রাজনীতি করার অধিকার কেন থাকবে না?
এটা যুক্তি নয়, এটা ইতরামী! ইসলাম
বাদে পৃথিবীর অন্য যে কোন ধর্মীয় রাষ্ট্র
কনসেপ্ট সেই ধর্ম দিয়েই বাতিল করে দেয়া যাবে।যীশু রাজনীতি করেননি। খ্রিস্টীয় রাষ্ট্র গঠনের কোন তাগিদ তিনি তার শিষ্যদের দেননি। “হিন্দু রাষ্ট্র” ধারনা নিতান্তই ৪৭ সালের দেশভাগের ক্ষতের মধ্যে থেকে জন্ম
নেয়া একটা আবছায়া যা মূলত পাকিস্তানী জুজুর
ভয়ে, মুসলিম আগ্রাসন ঠেকাতে বার বার
হালে পানি পেয়েছে। আদতে “হিন্দু রাষ্ট্র”
ধারনাটাই ভারতবর্ষে মুসলিম আগমনের
আগে কি কেউ চিন্তা করতে পেরেছিল? “হিন্দু
ধর্ম” বলতে যে ধর্মীয় আইডেন্টি স্থীর
হয়েছে সেটা আসলে আর্যদের আগমনে স্থানীয়দের “অনার্য” হয়ে উঠার মত। কথিত এই “হিন্দু ধর্ম”আসলে একটা বহু ধর্মের সংকলন।এখানে নাস্তিক্য দর্শণ পর্যন্ত আছে! ভারতে “রাম রাজ্য” আওয়াজ
আসলে পাকিস্তানকে চাপে রাখা।
ভারতে বিজেপির সমর্থন বাড়ার কারণ আমার
ধারনা মুসলিম সন্ত্রাসবাদী, পাকিস্তান
ইস্যুতে কথিত “সেক্যুলারদের” উপর
ভরসা করতে না পারার ফল। ভারতের এডুকেটেড,সুশিক্ষিত জনগণ ইসলামী রাষ্ট্রের আদলে কোন “হিন্দু রাষ্ট্রর” সঙ্গে আদৌ পরিচিতই নয়।অশিক্ষিত, পিছিয়ে পড়া জনগণের কাছেও ইসলামী রাষ্ট্রের অনুকরণে কোন রাষ্ট্রীয় ধারনা অচেনা। আসলে ইসলামী রাষ্ট্র ও ইসলামী রাজনীতি একান্তই মুসলিমদের নিজস্ব কনসেপ্ট। আল্লাহ এখানে নিজে বলে দেন রাষ্ট্র গঠনের জন্য। আল্লার নবী এখানে এই রাষ্ট্রের ধরন, প্রকৃতি, সেই রাষ্ট্রে বিধর্মী জনগণের কতটুকু অধিকার সংরক্ষিত থাকবে তাও নির্ধারিত।মডারেট মুসলিমধারীরা খুব গর্ব ও ইসলামী রাষ্ট্র
ব্যবস্থাকে গ্রহণযোগ্য করার জন্য মদিনা সনদের কথা উল্লেখ করেন। অথচ নুন্যতম
ইসলামী জ্ঞান থাকলে মদিনা সনদকে “পৃথিবীর
প্রথম লিখিত সংবিধান” বলতো না। এমনকি এক শ্রেণীর ইসলামী স্কলারও চরম মিথ্যাচার
করে মদিনা সনদকে সংবিধান
বলে “ইসলামী রাষ্ট্র” বলে যাকে দেখান
সেটা আসলে মদিনায় হযরত মুহাম্মদের গমনের পর
স্থানীয় ইহুদীসহ অন্যান্য জনগোষ্ঠির
সঙ্গে একটা চুক্তি। সেই চুক্তির অন্যতম ছিল
তারা কুরাইশদের সঙ্গে কোন সহযোগিতা করবেন না। এই চুক্তি পরে ভেঙ্গেও যায় মুখের কথায়।চুক্তি আর সংবিধানের পার্থক্যও এরা বুঝে না!প্রকৃত ইসলামী রাষ্ট্র হচ্ছে কুরআন ও হাদিস অনুযায়ী পরিচালিত রাষ্ট্র ব্যবস্থা যেখানে একমাত্র মুসলিমরাই রাষ্ট্র
নায়ক হবেন। সেখানে নানা রকম শর্ত পূরন
করে বিধর্মীরা থাকতে পারে “মুসলিমদের
অধীনে তাদের জিম্মায়”। জিজিয়া করের মত
ভয়ংকর চড়া মূল্যে “সিকউরিটি মানি” প্রদান
করেই ইসলামী রাষ্ট্রে বসবাস করতে হবে। হযরত ওমরের আমলে ইসলামী রাষ্ট্রে বিধর্মীদের প্রতি যে বিধি বিধান ওমর ঠিক করে দিয়েছিল তাতে হিটলারের ইহুদী নীতিও লজ্জ্বা পাবে! আগ্রহী কেউ চাইলে কমেন্ট ঘরে সেই ভয়ংকর নীতিমালা দেয়া যাবে।
সমস্ত ইউরোপ এখন ইসলামীকরণের
ভয়ে কম্পিত হয়ে আছে। যে ইউরোপ রেঁনাসার
মাধ্যমে একটা বর্বর ধর্মীয় বলয়
থেকে মুক্তি লাভ করেছিল আজ বহিরাগত ইসলাম
সেখানে ফের ধর্মীয় অশান্তি আমদানি করেছে।এই সুযোগে খ্রিস্টান ও
ইহুদী মৌলবাদী রাজনৈতিক শক্তির উত্থান
অতি আসন্ন। ইউরোপের জনগণ হয়ত একসময়
বাধ্য হয়েই এইরকম মৌলবাদী শক্তিতে আস্থা রাখতে শুরু করে দিবে সেক্যুলার দলগুলোর উপর বিরক্ত হয়ে।
এতে যেটা হবে বর্ণবাদী, সাম্প্রদায়িক মনোভাব নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। কিন্তু ইউরোপ কখনোই “খিস্টান রাষ্ট্র” হয়ে উঠবে না সেই অর্থে যে অর্থে আমরা “ইসলামী রাষ্ট্রকে” চিনি। খ্রিস্টান মৌলবাদসহ হিন্দু মৌলবাদ,
ইহুদী মৌলবাদ, বৌদ্ধ মৌলবাদকে মোকাবেলা করা সেই ধর্ম দিয়েই খুব
সোজা। ধর্ম থেকে খুব সহজেই বলে দেয়া যায়-
এসব ধর্মের কোথাও বলা নেই। কিন্তু মডারেট
মুসলিমরা সারাজীবন মাথাকুটেও প্রমাণ
করতে পারবে না “ইসলামী রাষ্ট”
ব্যবস্থা বলে দুনিয়াতে কিছু নেই। এটা কুরআন ও
হাদিস দ্বারা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।…
মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে জন্ম নেয়া বাংলাদেশ
যদি “ইসলামী রাষ্ট্র” কায়েম হয়
সেটা মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশের সঙ্গে পুরোপুরি সাংঘর্ষিক। শুধু “মুসলমানের দেশ” অর্জন করার জন্যই মুক্তিযুদ্ধ হয়নি।আল্লার আইন বাস্তবায়ন করার কোন অঙ্গিকার মুক্তিযুদ্ধে ছিল না। শরীয়া আইনে চলার জন্য পাকিস্তান থেকে পৃথক হয়ে বাংলাদেশের জন্ম হয়নি। বাংলাদেশে যারা (আসিফ নজরুল টাইপ)
ধর্মীয় রাজনীতির পক্ষে কথা বলেন
তারা ইসলামী রাজনীতির কথাই বলেন।
তারা যে এসব জানেন না তা নয়, জেনেও এই
চালাকীটা করেন তাদের মুসলিম বিশ্বাসের
জায়গা থেকে- যা তাদের শিক্ষাদীক্ষা, পাশ্চত্য
রাষ্ট্র চিন্তা সত্ত্বেও স্ববিরোধীতা করে যায়
নিজের সঙ্গে। জামাতের রাজনীতির পক্ষেও
কথা বলাও এই মুসলিম দূর্বলতা থেকেই।
জামাতের অপরাধী রাজাকার, আল বদরদের বাদ
দিয়ে নতুন প্রজন্মের নেতাকর্মীদের
জামাতে ইসলামী রাজনীতি করতে বাধা কোথায়-এরকম যুক্তি যারা দেন তারা নি্শ্চিত করেই মতলববাজ। জামাত একটা আর্দশের উপর রাজনীতি করে। সেই আর্দশ
তাদেরকে দিয়ে গণহত্যা, লিস্ট
করে বাড়ি বাড়ি থেকে ধরে বুদ্ধিজীবীদের
হত্যা করতে প্ররোচিত করেছিল। হিটলারের
যে আদর্শ, সেই আদর্শের মানুষ যারা দ্বিতীয়
বিশ্বযুদ্ধের সময় জন্ম নেয়নি, ইহুদী গণহত্যার সঙ্গে জড়িত নয়, তাদেরকে কি হিটলারের আদর্শের রাজনীতি করতে দেয়া উচিত? আরো একটা হলোকাস্ট সংঘঠিত করার জন্য?আমাদের সঙ্গে এখন আফগানিস্তান, পাকিস্তান,আফ্রিকার গৃহযুদ্ধে আক্রান্ত দেশগুলোর
মধ্যে কোন তফাত নেই। একটা দেশে রাজনৈতিক বিরোধ থাকতে পারে, অশান্তি থাকতে পারে- তাই বলে বাস ভর্তি মানুষ আগুন
দিয়ে পুড়িয়ে মারা সম্ভব? হ্যা, সম্ভব! জামাতের রাজনীতির পক্ষে এটা খুবই সম্ভব। কারণ জামাত আর সব ইসলামী রাজনীতির মতই “জিহাদের সময় সব বৈধ” নীতিতে বিশ্বাসী।এদেশে যে ধর্মীয় আবহের রাজনীতির চর্চা শুরু হয়েছিল, “বহুদলীয় গণতন্ত্রের” উর্দির নিচে যে ইসলামী রাজনীতির শুরু হয়েছিল,বাংলাদেশ আজ তার ফল ভোগ করছে।বিএনপি সেই রাজনীতির সঙ্গে মেলিটারির একনায়কতন্ত্রের মিলনের ফসল। এ জন্যই জামাতের সঙ্গে মিলে মাসব্যাপী মানুষ পোড়ানোর মচ্ছবে বিএনপির সহাবস্থান খুবই স্বাভাবিক। এর থেকে বেরিয়ে আসার অনেক করণীয়র মধ্যে একদম প্রথম ও অলঙ্ঘণীয় কারণীয়ই হলো জামাত ও
ইসলামী রাজনীতিকে নিষিদ্ধ করা। বিএনপির মত পরগাছা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় আসতে না পারলেই দল ভেঙ্গে বিলিন হয়ে যাবে। কিন্তু
দেশে ইসলামী রাজনীতি কি আওয়ামী লীগ
থেকে রূপান্তরিত “মুমিন লীগ” করতে চাইবে?
বাস্তবতা হচ্ছে এটা করলে তাদেরকেই করতে হবে।বিকল্প কেউ নেইও…

No comments:

Post a Comment